আশুরা: ইতিহাসের রক্তিম এক দিন
ভূমিকা:
ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররম। আর এই মাসের দশম দিন—"আশুরা"—ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় ও বেদনাবিধুর এক দিন। এই দিনে সংঘটিত হয়েছে ন্যায়-অন্যায়ের চরম সংঘাত, আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ উদাহরণ, আর মানুষের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো এক মহান ইতিহাস—
কারবালার
আশুরার পূর্ব ইতিহাস:
- আশুরা শুধু কারবালার সাথেই জড়িত নয়, বরং বহু আগে থেকেই এটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে আসছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়এই দিনেই আল্লাহ তা’আলা হজরত নূহ (আ.)-এর কিশতিকে জলে ভাসা থেকে রক্ষা করেন।
এই দিনেই হজরত মূসা (আ.) ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি পান এবং বনি ইসরাইল রক্ষা পায়।ইহুদিরাও এই দিন রোজা রাখত কৃতজ্ঞতা প্রকাশে।
কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা:৬১ হিজরির ১০ই মহররম (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) — ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ ও মর্মস্পর্শী অধ্যায়। এই দিনে মহানবী (সা.)-এর প্রিয় দৌহিতহজরত ইমাম হুসাইন (রা.), ইয়াজিদের অবিচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য ও ইনসাফের পতাকা হাতে নিয়ে শহীদ হন ইরাকের কারবালা প্রান্তর
মূল ঘটনা:
- হুসাইন (রা.) মদিনা থেকে মক্কা হয়ে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা দেন, কারণ সেখানকার লোকেরা তাঁকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
- কিন্তু কুফায় প্রবেশের আগেই ইয়াজিদের বাহিনী তাঁকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
দশদিন কারবালায় তাঁরা পরিবারসহ পানির এক ফোঁটা ছাড়াই কাট১০ই মহররমে—অর্থাৎ আশুরার দিনে—ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর ৭২ জন সাথী একে একে শহীদ হন।
শিক্ষা ও তাৎপর্য:
আশুরা আমাদের শেখায়—সত্যের জন্য জীবন দেওয়া যায়, কিন্তু মিথ্যার কাছে মাথা নোয়ানো যায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াই প্রকৃত ঈমানের পরিচয ত্যাগ ও শোক নয়, বরং আদর্শ ও শিক্ষা নিয়ে আশুরাকে স্মরণ করাই গুরুত্বপূর্ণ
মুসলিম বিশ্বে আশুরা পালন:
- অনেকে এই দিনে রোজা রাখেন (৯ ও ১০ বা ১০ ও ১১ মহররম)।
অনেকে দান-সদকা করেন, আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগের চেতনায় মনোনিবেশ করেন।শিয়া মুসলিমরা ইমাম হুসাইনের শোকানুষ্ঠান পালন করেন
আশুরা কোনো শোক পালনের দিন নয় শুধু, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। এটি সেই দিনের কথা স্মরণ করায়, যেদিন একটি পরিবার গোটা উম্মাহকে শিক্ষা দিয়ে গিয়ে জুলুমের কাছে মাথা না নোয়ানোর অমর: