a cat is sitting on a chair

প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে পাথরের সরঞ্জাম কেন গুরুত্বপূর্ণ?

BD Feature, Writter

Author

Author's Avatar
BD Feature

Writter

Disclosure statement

I am a journalist .

https://theconversation.com/historic-ruling-finds-climate-change-imperils-all-forms-of-life-and-puts-laggard-nations-on-notice-261848
Link copied

পাথরের সরঞ্জাম কী?

পাথরের তৈরি সরঞ্জাম হলো এমন শিলা, যা কোনো কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন বছর আগে মানুষের পূর্বপুরুষদের মধ্যে প্রথম এই প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি মানবজাতির বিবর্তনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

বর্তমানে আমরা, হোমো স্যাপিয়েন্স, এই পৃথিবীর একমাত্র জীবিত হোমিনিন (man-like primates)। তবে শুধু আমরাই না, অন্য অনেক প্রজাতির বানর এবং এপ (Great Apes) – যেমন শিম্পাঞ্জি – পাথর ব্যবহার করে থাকে। তবে হোমিনিনরা পাথর ব্যবহার করেছে অনেক পরিশীলিত ও সৃজনশীল উপায়ে।

যেমন, কোনো বানর একটি শক্ত পাথর হাতে নিয়ে অন্য একটি সমতল পাথরের ওপর বাদাম ভাঙে — কিন্তু এটি একটি সরল ও স্বাভাবিক ব্যবহার। পক্ষান্তরে, হোমিনিনরা পাথরের আকৃতি পরিবর্তন করে, তাকে ধারালো ও ব্যবহারোপযোগী সরঞ্জামে রূপান্তর করেছে — যা প্রাণীজগতে অন্য কোথাও দেখা যায় না।

এই সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন কাজে, যেমন:

মাংস বা উদ্ভিদ কাটতে

কাঠের কাজ করতে

চামড়া ছাঁটতে

অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে

পাথরের সরঞ্জামের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব

প্রত্নতত্ত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে পাথরের সরঞ্জাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ:

পাথর অত্যন্ত টেকসই, হাজার হাজার বছর পরেও টিকে থাকে।

এগুলোর মাধ্যমে প্রাচীন মানবগোষ্ঠীর আচরণ, দৈনন্দিন জীবন ও পরিবেশের সাথে তাদের খাপ খাওয়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

এগুলো বিভিন্ন সময় ও ভৌগোলিক অঞ্চলে মানুষের অভিযোজন এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিবর্তন বিশ্লেষণে সহায়ক হয়।

পাথরের সরঞ্জাম কীভাবে তৈরি হয়?

হোমিনিনরা প্রধানত দুইভাবে পাথরের সরঞ্জাম তৈরি করত:

ফাটিয়ে (Fracturing) – চাপ বা আঘাত দিয়ে ফাটিয়ে চিপস বা টুকরো তৈরি করে

ঘষে (Abrading) – ঘষে আকৃতি তৈরি করে

এখানে আমরা মূলত “ফ্লেকড স্টোন টেকনোলজি”-র কথা বলছি, যেটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

ফ্লিন্টন্যাপিং প্রক্রিয়া:

একটি নির্দিষ্ট পাথরের প্রান্তে আঘাত করা হয়, যাকে বলা হয় স্ট্রাইকিং প্ল্যাটফর্ম।

সেই আঘাতে পাথরের এক বা একাধিক অংশ আলাদা হয়ে যায়, যেগুলোকে ফ্লেক (flake) বলা হয়।

সেই ফ্লেকগুলো খুবই ধারালো হয় এবং সরাসরি ব্যবহারের উপযোগী।

কখনো কখনো সেই ফ্লেকগুলোকে আরও ঘষে, কেটে নির্দিষ্ট আকারে রূপান্তর করা হয়।

এক ক্লাসিক উদাহরণ হলো হ্যান্ড অ্যাক্স (hand axe), যা পানির ফোঁটার মতো আকারে গঠন করা হয়।

প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি:

হাতুড়ি পাথর (hammerstone) বা হরিণের শিংয়ের তৈরি বিলেট (billet)

চামড়ার প্যাড, দস্তানা, চোখ রক্ষার চশমা

অ্যাব্রেডার – পাথর ঘষে শক্ত করার জন্য ব্যবহার হয়

পাথর কাটার সময় আহত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায় — ফ্লিন্টন্যাপিংয়ে কাটা আঙুল অনেকেরই অভিজ্ঞতা!

সব পাথর কি সরঞ্জামে রূপান্তর করা যায়?


না, সব পাথর উপযুক্ত নয়। ফ্লিন্টন্যাপিংয়ের জন্য পাথরের নির্দিষ্ট একটি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার, যাকে বলে কনকয়ডাল ফ্র্যাকচার (conchoidal fracture) — যেমনটি কাঁচ ভাঙলে দেখা যায়।

এই ধরনের ফাটলে পাথরে তরঙ্গের মতো রিং তৈরি হয়। আগেভাগেই একজন দক্ষ ফ্লিন্টন্যাপার বুঝে ফেলতে পারেন, পাথরের কোন জায়গায় আঘাত করলে কোন ধরনের ফ্লেক তৈরি হবে।

অবসিডিয়ান (Obsidian), যা আগ্নেয়গিরিজাত কাচ, কনকয়ডাল ফ্র্যাকচারের আদর্শ উদাহরণ।

পাথরের সরঞ্জাম চেনার উপায়

অনেকেই ভাবেন, “এই পাথরটা হাতের সঙ্গে ভালোভাবে মিলে গেছে, নিশ্চয়ই এটি প্রাচীন যন্ত্র” — কিন্তু প্রত্নতত্ত্বে এমন অনুমান যথেষ্ট নয়। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা সাধারণত নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো খুঁজে থাকেন:

১. ফ্লেক স্কার বা নেগেটিভ রিমুভালস:

একটি পাথর থেকে ধারাবাহিকভাবে ফ্লেক সরানো হলে তার পৃষ্ঠে সেই দাগ বা রেখা থেকে যায়। এগুলো এলোমেলো নয়, বরং নির্দিষ্ট দিক ও প্যাটার্নে থাকে।

২. বাল্ব অফ পারকাসন:

ফ্লেকের নিচের অংশে ছোট একটি উঁচু বাল্বের মতো অংশ থাকে। এটি আঘাতের সময় পাথরের ভেতর বলের গতি প্রবাহের কারণে সৃষ্টি হয়।

এটি প্রাকৃতিকভাবে হওয়া কঠিন, যদিও নেচারালিথ নামে কিছু প্রাকৃতিক ফ্লেক বিশ্বজুড়ে — এমনকি আন্টার্কটিকাতেও — পাওয়া গেছে।

৩. প্রেক্ষাপট (Context):

পাথরটি কোথায় পাওয়া গেছে? আশেপাশে একই ধরনের ফ্লেক, কোর বা যন্ত্র রয়েছে কি না?

যদি পাওয়া যায়, তাহলে সেটি সম্ভবত একটি প্রাচীন ওয়ার্কশপ বা বসতি এলাকা ছিল।

আবার, যদি পাথরটি স্থানীয় নয়, বরং বহু দূরের অঞ্চল থেকে এসেছে, তাহলে হয়তো তা কোনো আদান-প্রদানের মাধ্যমে আনা হয়েছিল।

নিজে চেষ্টা করে দেখুন!

সত্যিই পাথরের সরঞ্জাম চিনতে হলে, নিজের হাতে একবার ফ্লিন্টন্যাপিং প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো উপায়। আমি নিজে শতাধিক মানুষকে শিখিয়েছি — সবাই একমত হয়েছেন, এটা যতটা সহজ মনে হয়, আসলে ততটাই জটিল।

এই প্রক্রিয়াটি আপনাকে প্রাচীন মানুষের জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাবতে শেখাবে — কিভাবে তারা একটি পাথর থেকে ধারালো একটি অস্ত্র বানিয়ে জীবনধারণের জন্য সংগ্রাম করত।

Before you go ...

We're building a community of experts dedicated to rebuilding trust and serving the public by making knowledge available to everyone. Join us at the beginning of our journey and receive a curated list of articles in your inbox twice a week. Be among our first subscribers!

Get our newsletter

The BD-Feature
Academic rigour, journalistic flair

You might also like

No related posts found.